২০২৬ সালের যেদিন দিনের বেলায় রাত নেমে আসবে
বিরল পূর্ণ সূর্যগ্রহণে অন্ধকারে ঢেকে যাবে পৃথিবীর আকাশ
২০২৬ সালের ১২ আগস্ট পৃথিবীর আকাশে এক বিরল জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। সেদিন দিনের বেলা হঠাৎ করেই আকাশ অন্ধকার হয়ে যাবে, যেন দুপুরবেলায় রাত নেমে এসেছে। কারণ ওইদিন ঘটবে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ, যার ফলে সূর্যের আলো পুরোপুরি ঢেকে যাবে চাঁদের আড়ালে। বিজ্ঞানীদের ভাষায়, এটি হবে চলতি শতাব্দীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গ্রহণগুলোর একটি।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের তথ্য অনুযায়ী, এ গ্রহণটি ইউরোপ, গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, স্পেন, আর্কটিক অঞ্চলসহ বিশ্বের কিছু দেশে সরাসরি চোখে দেখা যাবে। পূর্ণগ্রাস অবস্থায় কয়েক মিনিটের জন্য আকাশে দিনের আলো নিভে গিয়ে সৃষ্টি হবে সন্ধ্যার মতো অন্ধকার। এমনকি অনেক অঞ্চলে পাখিরা বাসায় ফিরে যাওয়া, তাপমাত্রা হঠাৎ কিছুটা কমে আসা এবং বাতাসের গতি পরিবর্তনের মতো প্রাকৃতিক আচরণও দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে কি?
বাংলাদেশ থেকে পূর্ণগ্রাস গ্রহণ দেখা যাবে না। তবে ওইদিন আংশিক সূর্যগ্রহণ দৃশ্যমান হতে পারে, যদি আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। দেশের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিশেষ সোলার ফিল্টার বা গ্রহণ দেখার নিরাপদ চশমা ছাড়া এই মুহূর্ত পর্যবেক্ষণ করা উচিত নয়, কারণ সরাসরি সূর্যের দিকে তাকালে চোখের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
কেন হবে দিনের বেলায় অন্ধকার?
এ ধরনের অন্ধকার নামার মূল কারণ হলো—সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান নেয়। চাঁদ ঠিক সূর্যের সামনে চলে আসলে সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারে না এবং কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ঢেকে যায় গভীর ছায়ায়। ফলে দিনের আলো মিলিয়ে গিয়ে সৃষ্টি হয় রাতের মতো পরিবেশ।
বিজ্ঞানী ও পর্যটকদের আগ্রহ
এই সূর্যগ্রহণকে ঘিরে ইতোমধ্যেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। গ্রহণ পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষ ক্যাম্প, বৈজ্ঞানিক সেমিনার এবং লাইভ সম্প্রচারের প্রস্তুতিও চলছে। আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই দিনটিকে ‘লাইভ ল্যাবরেটরি’ হিসেবে ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, “এটি হবে এমন একটি মুহূর্ত, যখন দুপুরবেলা মানুষের মনে হবে—আকাশে রাত নেমে এসেছে।”