বাংলা চলচ্চিত্রের খল চরিত্রের এক উজ্জ্বল নাম — মিজু আহমেদ

86

শিরোনাম: বাংলা চলচ্চিত্রের খল চরিত্রের এক উজ্জ্বল নাম — মিজু আহমেদ

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে খল চরিত্রে অভিনয় করে যেসব অভিনেতা দর্শকদের মনে স্থায়ী ছাপ ফেলেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মিজু আহমেদ। বাংলা সিনেমায় তার দুর্দান্ত উপস্থিতি, কণ্ঠের জোর, চোখেমুখের অভিব্যক্তি এবং বাস্তবধর্মী অভিনয় তাকে খলচরিত্রে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

মিজু আহমেদ জন্মগ্রহণ করেন কুষ্টিয়া জেলায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন। নাট্যচর্চার মাধ্যমে তার অভিনয় জীবনের সূচনা হলেও পরবর্তীতে তিনি চলচ্চিত্রে পা রাখেন এবং দ্রুতই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

চলচ্চিত্রে অভিষেক

মিজু আহমেদ প্রথম দিকে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করলেও পরে তিনি খল চরিত্রে বেশি জনপ্রিয়তা পান। ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমায় কাজ করেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: তিন কন্যা, অন্তরে অন্তরে, জীবন সংসার, বীর প্রতীক, রাজা মাষ্টার, আম্মাজান ইত্যাদি।

খল চরিত্রে বৈচিত্র্য

মিজু আহমেদের খলচরিত্রগুলো ছিলো বহুমাত্রিক। তিনি কখনো ছিলেন গ্রাম্য জমিদার, কখনো গ্যাং লিডার, আবার কখনো দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ বা পুলিশ অফিসার। তার অভিনয় দর্শককে এতটাই বিশ্বাস করাতে পারত যে অনেক সময় বাস্তবেও দর্শকরা তাকে “ভিলেন” ভাবতে শুরু করতেন।

রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি মিজু আহমেদ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মৃত্যু

২০১৭ সালের ২৭ মার্চ মিজু আহমেদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি ট্রেনে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন, পথেই তার মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্রে এক বিশাল শূন্যতা তৈরি হয়।

উপসংহার

মিজু আহমেদ ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক অকৃত্রিম খলনায়ক, যিনি ভয়, শক্তি ও অভিনয় দক্ষতাকে একত্র করে একটি বিশেষ ধারা গড়ে তুলেছিলেন। আজও তার অভিনীত চরিত্রগুলো দর্শকদের মনে জীবন্ত।

     More News Of This Category

Like page