জাতিসংঘ আগামী শুক্রবার বিলুপ্ত হলে বিশ্বজুড়ে কী ঘটতে পারে
সংবাদ প্রতিবেদন:
(আন্তর্জাতিক ডেস্ক) — যদি জাতিসংঘ (UN) আগামী শুক্রবার হঠাৎ বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে বিশ্বের কূটনৈতিক ও মানবিক ভারসাম্যে এক বিশাল ধাক্কা লাগবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি ছিল আন্তর্জাতিক শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকার রক্ষার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম। এর অস্তিত্ব হারানো মানে হবে বিশ্বশান্তির এক বড় স্তম্ভ ভেঙে পড়া।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, মানবাধিকার কাউন্সিল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), ইউনিসেফ, ইউনেস্কোসহ বিভিন্ন সংস্থা কার্যত বন্ধ হয়ে গেলে সবচেয়ে বড় আঘাত আসবে দরিদ্র ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর ওপর। বর্তমানে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান মানবিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘ বিলুপ্ত হলে বড় শক্তিগুলোর মধ্যে নতুন এক ধরনের ক্ষমতার প্রতিযোগিতা শুরু হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া নিজেদের স্বার্থে নতুন জোট গঠনে এগিয়ে যাবে। এতে বিশ্ব রাজনীতি আরও বিভক্ত ও অস্থিতিশীল হতে পারে।
অন্যদিকে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অনুপস্থিতিতে আফ্রিকা, ইউক্রেন, গাজা ও দক্ষিণ এশিয়ার মতো সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে নতুন করে সহিংসতা বাড়ার ঝুঁকি থাকবে। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, শরণার্থী সুরক্ষা, এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অর্জনের প্রচেষ্টা হঠাৎ থেমে যেতে পারে।
বাংলাদেশের মতো দেশ, যারা জাতিসংঘের উন্নয়ন সহায়তা ও শান্তিরক্ষী মিশনের ওপর নির্ভরশীল, তারাও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক সহযোগিতা (যেমন সার্ক, আসিয়ান, আফ্রিকান ইউনিয়ন) সাময়িক বিকল্প হতে পারে, তবে জাতিসংঘের মতো বৈশ্বিক সমন্বিত কাঠামো গড়ে তোলা প্রায় অসম্ভব।
বিশ্বনেতারা এখন প্রশ্ন তুলছেন— জাতিসংঘ-পরবর্তী বিশ্ব কি শান্তি বজায় রাখতে পারবে, নাকি নতুন এক বিশৃঙ্খলার যুগে প্রবেশ করবে?
– তিস্তা টিভি আন্তর্জাতিক ডেস্ক